A Shepherd Boy attacked by a wolf

নেকড়ে বাঘ ও মিথ্যাবাদী রাখালের পরিণাম – ছোটদের নৈতিক শিক্ষামূলক গল্প

একটি রাখাল বালক প্রতিদিনের মতো পাহাড়ের উপত্যকায় গ্রামের ভেড়াগুলো চড়িয়ে বেড়াচ্ছিলো। সে ছিলো খুবই দুষ্টু প্রকৃতির। সে ভাবলো আজ গ্রামবাসীর সাথে একটু দুষ্টামি ঠাট্টা করা যাক …

রাখাল বালকটি সে তার আনন্দের জন্য হঠাৎ চিৎকার দিয়ে উঠলো – নেকড়ে! নেকড়ে!! নেকড়ে!!! নেকড়ে ভেড়া গুলোকে তাড়া করছে। বাচাও! বাচাও!! বাচাও!!!

গ্রামের লোকেরা রাখাল বালকটির এর চিৎকার শুনে উত্তেজনার সাথে ভয়ে ছুটে এলো পাহাড়ের উপরে। কিন্তু তারা এসে কোন নেকড়ে দেখতে পেলো না, ভেড়াগুলো তাদের জায়গায় ঠিকভাবেই চলাফেরা করছে। আর রাখাল বালক গ্রামবাসীদের দেখে হাসতে লাগলো।

গ্রাম এর লোকজনেরা এটা দেখে রাখাল বালক এর উপর খুবি রেগে গেলো এবং খুব হতাশ হলো।

গ্রামের লোকজনেরা রাখাল বালক কে সতর্ক করে দিয়ে বললো, যখন কোনো নেকড়েই আসছে না, এভাবে নেকড়ে, নেকড়ে বলে চিৎকার করো না ছেলে। আমরা কতইনা কষ্ট করে তোমাকে বাচাতে এলাম।

A Shepherd Boy attacked by a wolf
নেকড়ে বাঘ ও মিথ্যাবাদী রাখালের পরিণাম – ছোটদের নৈতিক শিক্ষামূলক গল্প

গ্রামের লোকেরা হতাশ হয়ে সকলে নিজের কর্মস্থলে চলে আসলো।

দুইদিন পরে পরে সেই রাখাল বালক দুষ্টুমি করে আবারো চিৎকার দিয়ে উঠলো – নেকড়ে! নেকড়ে!! নেকড়ে!!! বাচাও! বাচাও!!, নেকড়ে ভেড়াগুলোকে তাড়া করছে বাচাও! বাচাও!!

গ্রামের লোকেরা সবাই আগের মতোই উত্তেজনার সাথে পাহাড়ের উপরে ছুটে এলো কিন্তু তারা এসে কোন নেকড়ে দেখতে পেলো না। ভেড়াগুলো তাদের জায়গায় ঠিকভাবেই চলাফেরা করছে।

আর রাখাল বালক গ্রামবাসীদের দেখে হাসতে লাগলো এবং বলতে থাকলো – সবাইকে কেমন বোকা বানালাম।

গ্রামবাসী হতাশ হলো এবং দুঃখ পেয়ে বালককে বললো, আমরা তোমাকে সাহায্য করার জন্য আসলাম আর তুমি কি-না আমাদের সরলতাকে উপহাস করছো! এটা ঠিক নয়। ভবিষ্যতে নেকড়ে না আসলে এভাবে আমাদের সময় নষ্ট করো না, আমাদের কষ্ট দিও না।

গ্রামের লোকেরা হতাশ হয়ে সকলে নিজের কর্মস্থলে চলে আসলো। কিন্তু রাখাল বালক গ্রামের লোকেদের কথা শুনে মুচকি হাসি দিলো।

পরে যখন বাড়ী ফেরার সময় হলো, সূর্য কিছু লাল হয়ে এসেছে ঠিক তখনি রাখাল বালক সত্যিকারের একটি নেকড়ে দেখতে পেলো। রাখাল বালক খুব ভয়ে, আতংকে লাফিয়ে উঠলো এবং যতটা সম্ভব জোরে চিৎকার দেয়া শুরু করলো – “নেকড়ে! নেকড়ে!! বাচাও! বাচাও!!”

গ্রামের লোকেরা আবারো রাখাল এর চিৎকার শুনতে পেলো। কিন্তু গ্রামবাসীরা ভেবেছিল রাখাল বালক আবার তাদের বোকা বানাচ্ছে, আর তাই তারা আর সাহায্য করতে আসলো না, তারা তাদের স্বাভবিক কাজকর্মে মনোযোগী হলো। এদিকে সূর্যাস্ত হয়ে যাবার পরেও রাখাল গ্রামবাসীদের ভেড়া নিয়ে সে এখনো কেনো ফিরে আসেনি। তাই গ্রামের লোকেরা মিলেমিশে পাহাড়ের উপরে রাকাল বালকটিকে এবং ভেড়ার পালকে খুজতে গেল।

তার দেখতে পেল বেশ কিছু ভেড়া এবং রাখাল বালকটিকে নেকড়ে মেরে ফেলেছে। ঠিক তখন একজন বৃদ্ধলোক ছেলেটিকে বললেন, “কেউ মিথ্যাবাদীকে বিশ্বাস করে না, এমনকি যখন সে সত্য বলে তখন ও নয়”।

তখন গ্রামের সাধারন মানুষগুলো বলাবলি করতে থাকলো, রাখাল বালকটি মিথ্যা কথা বলে এভাবে গ্রামের মানুষদের নিয়ে উপহাস না করতো তাহলে তার এই খারাপ পরিনতি হতো না। সকলের-ই উচিত সবসময় সত্য কথা বলা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।